নোয়াখালী প্রতিনিধি:সাইফুল ইসলাম
নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন,অধিকার না কি প্রয়োজন? এই নিয়ে দাবী করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র ইমরান নাজীর।
তিনি বলেন নোয়াখালী বিভাগ গঠনের দাবি আজকে কেবল একটি অঞ্চলের দাবি নয়, বরং এটি পুরো বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। নোয়াখালী বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় অঞ্চল। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী হওয়ায় ভৌগোলিক অবস্থান কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেঘনা নদীর মোহনা, সমুদ্রপথে নৌযান চলাচল, বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ও বাণিজ্যিক প্রবাহ এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
এই অঞ্চলের জনসংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, আর প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনায় চট্টগ্রাম কিংবা ঢাকার উপর নির্ভরশীলতা মানুষের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলাদা বিভাগ হলে মানুষ নিজের অঞ্চলে থেকেই সেবা পাবে, প্রশাসনিক জটিলতা কমবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রম আরও দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও নোয়াখালী দেশের অন্যতম সমৃদ্ধশালী জেলা। এখানে কৃষি, মৎস্য, শিল্প, প্রবাসী আয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তি দিচ্ছে। নোয়াখালীকে ধনী জেলা বলা হয় কারণ এখানকার মানুষ প্রবাসে আয় রোজগার করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশের এক নম্বর ধনী জেলা।বিভাগ হলে এই অঞ্চলের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও প্রসারিত হবে।
শিক্ষার ক্ষেত্রেও নোয়াখালী একটি সম্ভাবনাময় কেন্দ্র। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি), মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল কলেজসহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ অঞ্চলের শিক্ষার মান ও গবেষণার পরিধি বাড়িয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা রাজধানী বা অন্য বড় শহরে না গিয়েও মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।
উপকূলীয় জেলা হিসেবে নোয়াখালী প্রায়শই ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিভাগীয় কাঠামো থাকলে দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে। পাশাপাশি উপকূলীয় উন্নয়ন পরিকল্পনাও কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হবে।
সবশেষে বলা যায়, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন করলে চট্টগ্রাম ও ঢাকার প্রশাসনিক চাপ কমবে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবাহ আরও গতিশীল হবে এবং সাধারণ মানুষ সরকারি সেবা পাবে সহজে ও দ্রুত। তাই নোয়াখালী বিভাগ কেবল একটি দাবি নয়, এটি হলো সময়ের অপরিহার্য প্রয়োজন এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি।